বিভিন্ন অভিযোগে গ্রেপ্তার হেলেনা জাহাঙ্গীর অস্ট্রিয়া প্রবাসী আলোচিত বাংলাদেশি নাগরিক সেফুদার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ও লেনদেন রাখতেন বলে জানিয়েছে র্যাব। সেফুদা তাকে নাতনি হিসেবে সম্বোধন করতেন বলে র্যাবকে জানিয়েছেন হেলেনা জাহাঙ্গির।
শুক্রবার (৩০ জুলাই) বিকেলে জিজ্ঞাসাবাদের পর ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন।
ব্রিফিংয়ে তিনি জানান, হেলেনা সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যক্তিদের হেয় করতেন। বিভিন্ন বিষয় ছড়িয়ে দিয়ে সমাজে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতেন। নিজেকে মাদার তেরেসা, পল্লীমাতা হিসেবে পরিচয় দিতেন।
তিনি জানান, হেলেনা জাহাঙ্গীরের সঙ্গে ১৩ টি ক্লাবের সখ্যতা রয়েছে। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে চাঁদাবাজি করতেন।
'হেলেনা জাহাঙ্গীর একজন উচ্চাভিলাষী মহিলা। বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিয়ে নিজের উদ্দেশ্য হাসিল করতো।'
'সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিদেশে বসে সেফাতুল্লাহ নামে এক ব্যক্তি যে অশ্লীল শব্দ উচ্চারণ করতো সেই ব্যক্তির সঙ্গে অবৈধ লেনদেনসহ নিয়মিত যোগাযোগ রাখত হেলেনা জাহাঙ্গীর।'
খন্দকার আল মঈন বলেন, 'যেসব অবৈধ মদের বোতল উদ্ধার করা হয়েছে সবকিছু হেলেনা জাহাঙ্গীরের নিজ কক্ষ থেকে উদ্ধার করেছে।'
হেলেনার বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণী আইন, মাদক, টেলিযোগাযোগ আইন, অবৈধ আইপি টিভি টেলিভিশন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। তার বিরুদ্ধে এরই মধ্যে একটি চাঁদাবাজি মামলা হয়েছে বলে জানান তিনি।
'অবৈধ আইপি টিভি দিয়ে হেলেনা জাহাঙ্গীর বিভিন্ন জেলায় চাঁদাবাজি করতেন। তার বিরুদ্ধে টেলিযোগাযোগ আইনেও মামলা দায়ের করা হবে।'
হেলেনা জাহাঙ্গীর এসব বিষয় স্বীকার করেছেন বলে জানান খন্দকার আল মঈন।
এর আগে ব্যবসায়ী হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে অবৈধ মাদক, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুল তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়।
দুপুরে র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক জানিয়েছিলেন, হেলেনা জাহাঙ্গীরের জয়যাত্রা আইপি টেলিভিশনের কোনো বৈধ কাগজপত্র পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবারের (২৯ জুলাই) অভিযানে মিরপুরের জয়যাত্রা অফিস থেকে গুরুত্বপূর্ণ নথি সংগ্রহ করা হয়েছে।
গত ২৯ জুলাই সন্ধ্যায় হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাসায় অভিযান চালানোর পর তাকে আটক করে র্যাব। রাত ১২টার দিকে অভিযান শেষে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু। এ সময় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাব সদর দপ্তরে নেওয়া হয়।
অভিযানের সময় হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাসা থেকে কয়েক বোতল মদ, বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য, বন্যপ্রাণীর চামড়া ও ওয়াকিটকি সেট উদ্ধার করা হয়।
এর আগে ২৫ জুলাই আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্যপদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় তাকে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: